প্রথম শোক
“প্রথম শোক” – ব্রাতী বন্দ্যোপাধ্যায় (কবিতা ও আবৃত্তি)
প্রথম শোক
কখনো ভাবিনি তুমি যাবে
এত কাছে থেকে এত দূরে
একদিন হঠাৎ চলে যাবে
একটি নাম হয়ে, একটি সুরে।
তুমি যাবে, তবুও থাকবে
প্রতিটি পাতায়, প্রতিটি ফুলে,
তোমার হাসি, তোমার কান্না
মিশে যাবে আমার প্রতিটি মুহূর্তে।
প্রথম শোক, প্রথম ব্যথা
তুমি ছাড়া এই জীবন কতটা অসম্পূর্ণ,
তবুও জানি, তুমি আছো
আমার হৃদয়ের গভীরে, নিরবধি।
তুমি যাবে, তবুও ফিরে আসবে
প্রতিটি স্মৃতিতে, প্রতিটি স্বপ্নে,
তোমার ছোঁয়া, তোমার কথা
থাকবে আমার সঙ্গী, চিরকালের মতো।
প্রথম শোক, প্রথম ভালোবাসা,
তুমি ছাড়া এই জীবন কতটা ফাঁকা,
তবুও জানি, তুমি আছো
আমার হৃদয়ের গভীরে, নিরবধি।
এই কবিতাটি ব্রাতী বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা, যা প্রথম শোকের গভীরতা ও বেদনাকে প্রকাশ করে। কবিতাটি আবৃত্তি করার সময় কণ্ঠস্বরের মাধুর্য ও ভাবাবেগের মাধ্যমে এর গভীরতা আরও বেশি ফুটে উঠবে।
বনের ছায়ায় যে পথটি ছিল
সে আজ ঘাসে ঢাকা
সে নির্জনে হঠাৎ পেছন থেকে কে বলে উঠলো
আমাকে চিনতে পারো না?
আমি ফিরে তার মুখের দিকে তাকালাম
বললাম – ‘মনে পড়ছে
কিন্তু ঠিক নাম করতে পারছি না’
সে বলল – ‘আমি তোমার সেই অনেক কালের
সেই পঁচিশ বছর বয়সের সুখ’
তার চোখের কোণে একটু চল চল আবহ দেখালে
যেন দিঘির জলে চাঁদের রেখা
অবাক হয়ে দাড়িয়ে রইলাম
বললাম
– ”সেদিন তোমাকে শ্রাবণের মেঘের মতো
কালো দেখেছি, আজ যে দেখি
আশ্বিনের সোনার প্রতিমা,
সেদিনের সব চোখের জল কি হারিয়ে ফেলেছো?”
কোনো কথাটি না বলে সে একটু হাসলে
বুঝলাম
সবটুকু রয়ে গেছে ওই হাসিতে
বর্ষার মেঘ শরতের শিউলি ফুলের হাসি
শিখে নিয়েছে
আমি
জিজ্ঞাসা করলাম
– ”আমার সেই পঁচিশ
বছরের যৌবনকে কি
আজো তোমার কাছে রেখে দিয়েছো?”
সে বলল – ”এই দেখো না আমার গলার হার”
দেখলাম, সেদিনের বসন্তের মালার
একটি পদ্মও খসে নি
আমি বললাম – ”আমার আর্ত সব জীর্ণ হয়ে গেল
কিন্তু তোমার গলায় আমার সেই পঁচিশ বছরের
যৌবন আজো তো ম্লান হয় নি”
আসতে আসতে সেই মালতী নিয়ে
সে আমার গলায় পরিয়ে দিলো
সে বলল – ”মনে আছে? সেদিন বলেছিলে তুমি
সান্ত্বনা চাও না, তুমি সখ্য-ই চাও”
লজ্জিত হয়ে বললাম – ”বলেছিলাম কিন্তু
তারপর অনেক দিন হয়ে গেল, তারপর
কখন ভুলে গেলাম”
সে বলল – ”যে অন্তর্যামী বর তিনি তো ভোলেন নি
আমি সেই অবধেয় ছায়া তুলে গোপনে বসে আছি,
আমাকে বরণ করে নাও”
আমি তার হাত খানি আমার হাতে তুলে নিয়ে বললাম
এ কি তোমার অপূর্ব মূর্তি
সে বলল – ”যা ছিল সুখ আজ তাই হয়ে গেছে শান্তি